সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন

স্ট্রোক : মানসিক চাপ যত কম নেওয়া যায়

স্ট্রোক : মানসিক চাপ যত কম নেওয়া যায়

স্বদেশ ডেস্ক:

স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ। রক্তনালির জটিলতার কারণে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের একাংশের কার্যকারিতা হারায়। মনে রাখতে হবে, স্ট্রোক হার্টের কোনো রোগ নয়।

স্ট্রোকের কারণ : স্ট্রোকের বিভিন্ন কারণ থাকলেও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি/কোলেস্টেরল, ধূমপান প্রধানত দায়ী। এ ছাড়া বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটির কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।

লক্ষণ : হঠাৎ করে শরীরের একাংশ অবশ বা দুর্বল হয়ে যাওয়া। মাথাব্যথা ও বমি হওয়া। হঠাৎ অজ্ঞান হওয়া। কথা জড়িয়ে যাওয়া বা একেবারেই কথা বলতে না পারা।

স্ট্রোক হলে তাৎক্ষণিক করণীয় : কোনো রোগীর ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে তার স্ট্রোক হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিতে হবে। সম্ভব হলে মস্তিষ্কের ঈঞ ঝপধহ করে স্ট্রোকের ধরন বুঝতে হবে। মনে রাখতে হবে, স্ট্রোক দুই ধরনের হয়। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার জন্য ওংপযবসরপ ঝঃৎড়শব অথবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য ঐবসড়ৎৎযধমরপ ঝঃৎড়শব হয়ে থাকে। এর চিকিৎসা পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন।

জরুরি চিকিৎসা : অজ্ঞান রোগীর ক্ষেত্রে- শ্বাসনালি, শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন নিয়মিত রাখা। রোগী একদিকে কাত করে, বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে। চোখের যত্ন নিতে হবে। মূত্রথলির যত্ন (প্রয়োজনে ক্যাথেটার দিতে হবে) নিতে হবে। খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্ট্রোকের সব রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না। তবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি, রোগী অজ্ঞান হলে অথবা স্ট্রোকের সঙ্গে অন্যান্য রোগ, যেমন- উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসার প্রধান উদ্দেশ্য মৃত্যুঝুঁকি কমানো, কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং পরবর্তীকালে যেন স্ট্রোক না হয়, তার ব্যবস্থা করা।

প্যারালাইসিস বা মুখ বেঁকে গেলে করণীয় : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা এবং ফিজিওথেরাপি করাতে হবে।

বাংলাদেশে স্ট্রোকের হার এবং ঝুঁকি : আমাদের দেশে স্ট্রোকের হার প্রতি হাজারে ৫-১২ জন হয়। প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সুস্থতার হার : যথাসময়ে চিকিৎসা করলে ৩০ শতাংশ রোগী সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং ৩০ শতাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত থাকেন। বয়স সাধারণত স্ট্রোক চল্লিশোর্ধ্ব রয়স্ক মানুষের বেশি হয়। তবে অল্প বয়সেও স্ট্রোক হতে পারে।

স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায় : স্ট্রোক অনেকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিরোধযোগ্য। স্ট্রোকের প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা। যেমন- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার করা, রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ, শারীরিক ব্যায়াম নিয়মিত করা, ওজন ঠিক রাখা, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি, সতেজ ফলমূল খাওয়া জরুরি।

লেখক : অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877